জাতীয় ইস্যু তৈরিতে ফ্যাসিষ্টরা- কুমিল্লা’য় আওয়ামী গডফাদারের গলায় জুতার মালা

প্রকাশিত: ৯:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

জাতীয় ইস্যু তৈরিতে ফ্যাসিষ্টরা- কুমিল্লা’য় আওয়ামী গডফাদারের গলায় জুতার মালা

আব্দুল্লাহ আল মানছুর,কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা’য় যুবলীগ কর্মী রানা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী তৎকালীন কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরানোর ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হতে দেখা গেছে। গতকাল রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে জাতীয় ইস্যু তৈরিতে ব্যস্ত একটি মহল। কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অন্যতম সদস্য আব্দুল হাই কানু ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বিপ্লব(বাবা-ছেলের) ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার মূল কেন্দ্রস্থল ছিল চৌদ্দগ্রাম পাতড্ডা বাজার। বাবা-ছেলের সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করায় তৎকালীন বিএনপি, জামায়াতের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ বাড়িতে থাকতে পারেনি। নিত্যদিনের চাঁদাবাজি, চোরাকারবারী,মাদক বেচা কেনা করাই ছিল আবদুল হাই কানুর অন্যতম ব্যবসা। গণপরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে সংঘাত-রক্তপাত ঘটানো ছিলো কানু বাহিনীর নিত্যদিনের ব্যাপার। ২০১৬ সালের (২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ঘটিকায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পাতড্ডা বাজার কমিটি গঠন, মাদক বেচা কেনা ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ে তৎকালীন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বাতিসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান টিপু ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সদস্য আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট লীগের গডফাদার আবদুল হাই কানু’র (কানু বাহিনী) সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের সৃষ্টি হয়। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও কৃষকলীগের দু’গ্রæপের সংর্ঘষে গুলিতে নিহত হন যুবলীগ সদস্য গুনিশকরা গ্রামের শহিদ উল্লা’র ছেলে আবু বকর সিদ্দিকি রানা(৩২)। উক্ত ঘটনায় তিন যুবলীগ সদস্য গুলিবদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আবদুল হাই কানু বাহিনীর গুলিতে নিহত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য আবু বকর সিদ্দিকি রানা’র(৩২) মা রেহানা বেগম বাদী হয়ে ঘটনার একদিন পর চৌদ্দগ্রাম থানায় প্রধান আসামী করে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অন্যতম সদস্য লুদিয়ারা গ্রামের সলিমউদ্দিনের পুত্র আবদুল হাই কানু(৮০), কানুর ছেলে বাতিসা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বিপ্লব(৪৫), বিপ্লবের সহযোগী আব্দুল মালেকের পুত্র আব্দুল হান্নান(৩৫), যুবলীগ ক্যাডার ইমরান(৩০),জনি(২৮), আব্দুল মান্নানসহ ১০/১৫জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আওয়ামী রাজত্ব্যের দাপটে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিষ্ট খুনিরা কয়েকদিন জেলে থাকলেও পরবর্তীতে ক্ষমতার দাপটে তাদের আটক করতে পারেননি কোন আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। নতুন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে হত্যা মামলাসহ ৯টি মামলার আসামী স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের গডফাদার আব্দুল হাই কানু(৮০) ও তার ছেলে গোলাম মোস্তফা গা’ডাকা দিয়ে কুমিল্লা’র বাহিরে দীর্ঘ সময় ঢাকাতে অবস্থান নেন। হত্যা মামলাতে ক্ষান্ত হননি কানু বাহিনী। রানা হত্যাকান্ডের পর কানু বাহিনীর রাজত্ব দিন দিন আরো বেড়ে যায়, নির্যাতিত হতে থাকে জামায়াত বিএনপির নেতা কর্মীরা। হত্যাকারীরা এলাকাতে অবস্থান না করলেও গ্রাম ছেড়ে ঢাকাতে অবস্থান নিয়ে বাবা কানু – ছেলে গোলাম মোস্তফা বিপ্লব মাদক-চোরাকারবারীসহ চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাণিজ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। গ্রেফতার এড়িয়ে কয়েক বছর বাড়ি ছাড়া থাকলেও ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের ক্ষমতা প্রয়োগ করে বাবা-ছেলে ঢাকা থেকে ২০২০ এর দিকে আবারও চলে আসে চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। এদিকে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সদস্য আব্দুল হাই কানু(৩০) ছাত্র জনতার বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর গতকাল ২২ডিসেম্ব’২৪ দুপুর১ ঘটিকায় বাড়িতে আসে আওয়ামী গডফাদার কানু বাহিনীর প্রধান আব্দুল হাই কানু। আওয়ামী দোসররা কানু বাহিনীর প্রধান ৯টি মামলাসহ রানা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী আবদুল হাই কানুকে সাধু সাজাতে জুতার মালা গলা’য় দেওয়ার আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি মহল কাজ করেছে বলে দাবি করছেন জামায়াত,বিএনপির রাজনীতিবীদরা। আব্দুল হাই কানু মুক্তিযোদ্ধা’র গলায় জুতার মালা এ শিরোনামে বিভিন্ন ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছে সংবাদটি। তবে হত্যা মামলাসহ ৯টি মামলার অন্যতম আসামী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর গলায় জুতা’র মালা পরালো কোন অদৃশ্য শক্তি তা খতিয়ে দেখছে স্থানীয় প্রশাসন। উক্ত ঘটনার বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন-জুতার মালা কে পরালো তা ভিডিওতে দেখতে পাইনি, ভিডিওতে দেখেছি হত্যা মামলার আসামী মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতা পরানো এবং সে মুক্তিযোদ্ধা নিজেই জুতার মালা গলা থেকে নামিয়ে ফেলে এর পিছনের মূল কারিগর কে তা তদন্তে বেড়িয়ে আসবে। মুক্তিযোদ্ধাকে কল করে খোঁজ নিয়েছি এবং উক্ত ঘটনায় তিনি কোন প্রকার অভিযোগ করেননি। এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য ফজলে এলাহী রুবেল আমার দেশ প্রতিবেদককে বলেন-জুতার মালাকে জাতীয় ইস্যুতে নেওয়ার পরিকল্পনায় ব্যস্ত একটি মহল কাজ করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে এ ধরনের কর্মকান্ড প্রতিহত করার ,কোন ফ্যাসিষ্ট লীগ দ্বারা এ ধরনে গলায় জুতার কান্ডের পরিকল্পনা করা সম্ভব। তদন্তে বেরিয়ে আসবে ৯টি মামলা সহ হত্যা মামলার আসামী কানু বাহিনীর প্রধান কানু’র গলায় জুতা কেন।