মৃত্যু শয্যায় হাসপাতাল ভর্তি থেকেও একই দিনে দুই থানায় আসামি!

মৃত্যু শয্যায় হাসপাতাল ভর্তি থেকেও একই দিনে দুই থানায় আসামি!

প্রকাশিত: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪

মৃত্যু শয্যায় হাসপাতাল ভর্তি থেকেও একই দিনে দুই থানায় আসামি!

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

কুমিল্লায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে ৪৬টি মামলা হয়েছে, যেখানে ৩,৫৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬,৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব মামলায় অনেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন এবং অভিযোগ রয়েছে যে চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিতে আর্থিক লেনদেন হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, মিথ্যা অভিযোগে কেউ গ্রেপ্তার বা হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছে।মামলাগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই একই ঘটনার জন্য একাধিকবার করা হয়েছে এবং কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন জেলায় একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তদন্তে জটিলতা দেখা দিয়েছে।২৬ জুলাই দেবিদ্বার উপজেলার ১১ নং রাজামেহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে ৮/১০ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কুমিল্লার ডাক পত্রিকার সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন ও নারায়ণগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক হুমায়ুনকে কুপিয়ে ও লোহার রড, হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে দুজনের হাত-পা ভেঙে দেয়।এই বিষয়ে সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন বলেন, “আমি জসিম চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অপরাধের বিষয় নিয়ে সংবাদ করি। ডেনমার্ক প্রবাসীর নিকট চাঁদা দাবির একটি মামলা আদালতে দায়ের করার পর পিবিআই তদন্তকালে ভিডিও ফুটেজ দেখে আমাকে সাক্ষী করে আদালতে প্রতিবেদন দায়ের করে। সেই সুবাধে আদালত আমাকে ডাকলে আমি আদালতে সাক্ষী দেই। এ মামলায় জসিম চেয়ারম্যানের ৪ মাসের সাজা হয়। এরপরই পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে আসছিলো চক্রটি। ঘটনার দিন কুমিল্লা কাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক হুমায়ুন তিনিও নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় মাধাইয়া বাজার থেকে পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় একই সিএনজি যোগে নিজ বাড়ি যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীগণ বরাট রাস্তার উপর সিএনজি গতিরোধ করে আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমার (বিল্লাল) মাথায় কোপ দিলে মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম হয় এবং বাম হাত ও দুই পা ভেঙে দেয়। আমাকে রক্ষা করতে আসলে হুমায়ুন ভাইকে ও মেরে দুই হাত দুই পা ভেঙে দেয়।”স্থানীয় এলাকাবাসী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “একজন পেশাদার সাংবাদিক ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুর সাথে লড়ছেন হাসপাতালে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মামলায় তাদের কেও আসামি করা হলো। এই হামলায় আহত দু’জন এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি এবং পঙ্গু অবস্থায় মৃত্যুর পথে রয়েছে। তাদেরকেও চান্দিনা ও দেবিদ্বার থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে।”দেবিদ্বার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, “উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাবুল এবং তাঁরসহ আট পরিবারের ৩০ সদস্য ২ থেকে ৯ আগস্ট কক্সবাজারে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সকালে দেবিদ্বার থানার সাব্বির হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। ওই সময় আমাদের কক্সবাজার অবস্থানের সব তথ্যপ্রমাণ আছে। পুলিশ তদন্ত করলে সহজেই পেয়ে যাবে।গত ২৬ জুলাই রাজামেহার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলায় সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন ও স্বর্ন ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক হুমায়ুন পঙ্গু হয়ে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। অথচ ৪ আগস্ট দুপুরে দেবিদ্বার উপজেলা সদরে আঃ রাজ্জাক রুবেল হত্যা মামলায় এবং চান্দিনা থানায় সাইফুল ইসলাম রনিকে ভিক্টিম বাদী করে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে কিন্তু এসকল মামলায় অনেক নিরপরাধ ব্যাক্তিকে হয়রানি করতেই গণহারে আসামি করা হয়েছে।”কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, “এজাহারে যতই অসংগতি থাকুক যাচাই-বাছাই করে চার্জশিট দেওয়া হবে।”